[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1988273988.jpg[/IMG]
মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্টদের কর্মী ছাঁটাইয়ের হিড়িক একদিকে যেমন আশঙ্কার, বিপরীতে স্টার্টআপসহ কিছু ব্যবসার জন্য খানিকটা সুযোগও তৈরি করে দেয়। বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যবসাগুলো প্রযুক্তি জায়ান্টদের কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রভাবে লাভবান হচ্ছে। প্রযুক্তি খাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের সংখ্যা ২০২২ সালের আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৩ গুণ। কিন্তু চাহিদা রয়ে গেছে দক্ষ প্রকৌশলীর। যদিও ছাঁটাই হওয়া কিছু কর্মীকে নতুন চাকরি খুঁজে পেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ২০০০ সালে ডটকম ঝড়ের পর যেসব প্রকৌশলী বড় আইটি কোম্পানিগুলো ছেড়ে চলে যান, তারা উদ্ভাবনী স্টার্টআপের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। আইটি বিশেষজ্ঞদের মতে, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আবারো ঘটতে পারে।
জলবায়ু সংস্থা, প্রযুক্তি কোম্পানি ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টদের একটি দল জানুয়ারির মাঝামাঝি একটি ভার্চুয়াল ইভেন্টের আয়োজন করে। যার উদ্দেশ্য ছিল ‘ফ্রম বিগ টেক থেকে ক্লাইমেট টেক’ ব্যানারের অধীনে আইটি প্রকৌশলীদের পরিবেশ সেক্টরের সম্ভাব্য নিয়োগকারীদের সঙ্গে সংযোগ ঘটানো।
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল নির্বাহীরা প্রায় ৫০০ জন অংশগ্রহণকারীকে জলবায়ু ব্যবসায় ক্রমবর্ধমান সুযোগগুলোকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তারা একটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়েছেন, যেখানে বলা হয়েছে শূন্য-কার্বন অর্থনীতি অর্জনের খরচ ১ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি। মিটআপ ইভেন্টের ওয়েবসাইটটি ৪৬০টিরও বেশি স্টার্টআপ থেকে চাকরির প্রস্তাব তালিকাভুক্ত করে। কভিড-১৯ সংকটের মধ্যে ইউএস টেক জায়ান্টরা ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে কর্মীর পরিমাণ বাড়ায়, কিন্তু অনেকেই এখন অতিরিক্ত কর্মীদের মধ্যে সামঞ্জস্য তৈরিতে পিছিয়ে যাচ্ছে। মেটা প্লাটফর্মের সিইও মার্ক জাকারবার্গ স্বীকার করেছেন তার কোম্পানি কভিড-১৯ সময়কালের বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়ে ভীষণ আশাবাদী ছিল, তবে পরিস্থিতি বদলেছে।
এ অবস্থায় মেটা, অ্যামাজন ও গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট ১০ হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেয়। চাকরির তথ্যবিষয়ক মার্কিন ওয়েবসাইট লেঅফসডটএফওয়াইআই অনুসারে, ২০২২ সালে মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলো মোট ১ লাখ ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা প্রকাশ করে, যা ২০২১ সালের তুলনায় ১৩ গুণ বেশি এবং বিশ্বব্যাপী মোট কর্মী ছাঁটাইয়ের ৬০ শতাংশ। খরচ কমানোর জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছাঁটাইয়ের সংখ্যা এরই মধ্যে ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। যদিও তা আগ্রহী স্টার্টআপগুলোকে দক্ষ ও প্রতিভাবান কর্মীদের ধরে রাখার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।
চাকরিবিষয়ক মার্কিন পরিষেবা সংস্থা জিপরিক্রুটার বলেছে, প্রায় ৮০ শতাংশ ছাঁটাই করা কর্মী তিন মাসের মধ্যে নতুন চাকরি পেয়েছে। তাছাড়া এটি প্রযুক্তি কর্মীদের জন্য শক্তিশালী চাহিদাও প্রতিফলিত করে।
কর্মীরা যখন প্রযুক্তি কোম্পানি থেকে স্টার্টআপ বা প্রযুক্তিবহির্ভূ ব্যবসাগুলোয় কাজ করতে যায়, তখন তাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা নতুন ওই প্রতিষ্ঠানকে অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে সাহায্য করে। মূলত প্রক্রিয়াটি শিল্পের বৃদ্ধিকেও উৎসাহিত করছে।
জিপরিক্রুটারের মতে, যেসব কর্মী প্রযুক্তি কোম্পানি ছেড়েছেন তাদের প্রায় ৩০ শতাংশ খুচরা, অর্থ ও স্বাস্থ্যসেবাসহ অন্যান্য শিল্পে কাজ পেয়েছেন। প্রযুক্তি জায়ান্টদের ধীরগতির বৃদ্ধি মূলত প্রযুক্তি খাতের দক্ষ কর্মীদের অন্য কোথাও নতুন সুযোগ করে দিচ্ছে, যা শিল্পের ভবিষ্যৎ রূপান্তরের জন্য ভিত্তি স্থাপন করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।