[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1710617949.jpg[/IMG]
জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে চীনে সব ধরনের প্রযুক্তি ও চিপ উৎপাদন যন্ত্রাংশ রফতানি বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রশাসনের শঙ্কা প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চীন সামরিক শক্তিতে অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়বে। চীনের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তা দেশটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও সেমিকন্ডাক্টর খাতকে কয়েক যুগ পেছনে নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে (এসসিএমপি) এ কথা জানান তারা। গত সপ্তাহে চীনে উন্নত চিপ উৎপাদনে ব্যবহৃত মেশিন সরবরাহ বন্ধে নেদারল্যান্ডস ও জাপানের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মাধ্যমে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য দেশ থেকে চিপ, যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তি সরবরাহ পাওয়ার যে আশা করেছিল তাও বন্ধ হয়ে গেল।

২০২২ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যসংক্রান্ত যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল নতুন রফতানি নিষেধাজ্ঞা এর অনুরূপ। এর মাধ্যমে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সুপার কম্পিউটারমসহ উচ্চক্ষমতাসম্পন্ চিপ তৈরিতে যেসব প্রযুক্তির প্রয়োজন সেগুলোর উন্নয়ন ব্যাহত হবে। তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টর খাতের একজন পরামর্শক লেসলি উ এসসিএমপিকে জানান, যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি নেদারল্যান্ডস ও জাপানের সঙ্গে যে চুক্তি করেছে সেটি চীনের চিপ শিল্পের উন্নয়নে চাহিদার সব দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি আরো জানান, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্যান্য দেশ থেকে যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তি সরবরাহ নেয়ার মাধ্যমে দুই বছর ধরে চীনের চিপ শিল্প টিকে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
চীনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। জটিল কম্পিউটার প্রসেসরের জন্য এ প্রযুক্তির প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তার অন্যতম লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে এটি। চীনে এনভিডিয়ার এ১০০ ও এইচ১০০ চিপ রফতানিতে যুক্তরাষ্ট্র যখন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তখনই বিষয়টি নিশ্চিত হয়। সে সময় মার্কিন প্রশাসন আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল, সামরিক বাহিনীর উন্নয়নে এ চিপ ব্যবহার করা হতে পারে। অক্টোবরে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর চীনের ডিজাইন করা দুটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চিপের উৎপাদন কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি (টিএসএমসি) জানিয়েছিল, এ দুটি চিপ এনভিডিয়ার এ১০০-এর বিকল্প হিসেবে এবং সক্ষমতার দিক থেকে নতুন রেকর্ড তৈরি করবে। চীনের একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সফটওয়্যার স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা নাম না প্রকাশ করার শর্তে এসসিএমপিকে জানান, আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ চিপের সংকট তৈরি হয়েছে। যেগুলো স্টকে রয়েছে, সেগুলোর দামও বাড়াতে হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে তা প্রতিষ্ঠানের আয় কমিয়ে দিচ্ছে এবং গ্রাহককে নিরুৎসাহিত করছে।

তিনি জানান, নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের ভয়ে বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো হয়তো তাদের পণ্যের বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেবে কিংবা উৎপাদনই বন্ধ করে দেবে। ছোট ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবে। যারা টিকে থাকবে গবেষণা ও উন্নয়নে তাদের ব্যয় কমবে এবং নতুন কিছু বাজারজাতের হারও নিচে নেমে আসবে। সামগ্রিকভাবে পুরো খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এসসিএমপির কাছে দেয়া এক বিবৃতিতে স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘আমার মতে এটি যুক্তরাষ্ট্রের একটি ব্লিটজ স্ট্রাইক।’