তালিকাভুক্তির তৃতীয় বছরে নিজেদের সর্বোচ্চ আয় করে শেয়ার প্রতি ৭০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণার পরও বহুজাতিক মোবাইল ফোন অপারেটর রবির শেয়ারে আগ্রহ ফেরেনি পুঁজিবাজারে। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার ‘নো প্রাইস লিমিট’ বা মূল্যসীমা না থাকার দিন ঢাকা ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দর বা ‘ফ্লোর প্রাইস’ ৩০ টাকায়। তবে আগের কয়েক মাসের ধারাবাহিকতায় এদিনও ক্রেতা ছিল না বললেই চলে। সারা দিনে ৫ হাজার ২৩৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির মাত্র ৩১ হাজার ৯২২টি শেয়ার হাতবদল হয় ৬৭ বারে। লেনদেন হয় ৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। তবে ‘ব্লক মার্কেটে’ তুলনামূলক আগ্রহ ছিল বেশি। সেখানে ৫টি ট্রেডে ৩৭ লাখ ৪২ হাজার টাকায় হাতবদল হয় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৬০০টি শেয়ার। এই শেয়ার লেনদেন হয়েছে ‘ফ্লোর প্রাইসের’ চেয়ে ১০ শতাংশ ছাড়ে ২৭ টাকায়।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1230829502.png[/IMG]
বাজারে ধস ঠেকাতে গত ৩১ জুলাই থেকে দ্বিতীয়বারের মতো ‘ফ্লোর প্রাইস’ দেওয়ার পর লেনদেন যখন তলানিতে নেমে যায়, সে সময় ‘ব্লক মার্কেটে’ এভাবে ১০ শতাংশ ছাড়ে শেয়ার বিক্রির সুযোগ দেওয়া হয় নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে। ১৫ নভেম্বর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি জানায়, তার পরের কর্মদিবস থেকে এই সুযোগ মিলবে। তবে ‘ব্লকে’ কম দামে লেনদেন হলেও ফ্লোর প্রাইস কমে যাবে না। আবার ‘ব্লকে’ যে দর হবে, সেটি ‘মূল বাজারের’ দর হবে না। এই আদেশকে ‘এক বাজারে দুই নীতি’ হিসেবে দেখছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের ভাষায় এ নীতি ‘বৈষম্যমূলক’, কারণ, ‘ব্লকে’ যে ছাড়ে কেনার সুযোগ আছে, সেটি সবার জন্য নয়। সেখানে একবারে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকার শেয়ার কিনতে হয়। ফলে যাদের বিনিয়োগ কম, তারা সেই সুবিধাটা পাচ্ছেন না, যাদের বিনিয়োগ বেশি, তারাই নিতে পারছেন। এ কারণে ‘ব্লকে’ কম দামে কিনে মূল বাজারে বিক্রি করতে পারলেই ৫ লাখ টাকায় ৫০ হাজার টাকা মুনাফা করতে পারছেন এই ‘তুলনামূলক বড় বিনিয়োগধারীরা।’
‘ব্লকের’ প্রতি আগ্রহ বাড়ার পর এমনও দেখা গেছে, ‘মূল বাজারের’ চেয়ে সেখানে বেশি দরে লেনদেন হয়েছে, পরিমাণেও বেশি। সোমবার ‘ব্লক মার্কেটে’ মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৬ লাখ ৬০ হাজার ৪০৯টি শেয়ার হাতবদল হয় ১৪ টাকা ৯০ পয়সায়। অথচ ‘মূল বাজারে’ শেয়ারের দর ১৩ টাকা ৬০ থেকে ৭০ পয়সা। অর্থাৎ ‘ব্লকে’ সাড়ে ছয় লাখের বেশি শেয়ার কিনতে গিয়ে ক্রেতা বেশি খরচ করেছেন ৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা। একই দিন প্রকৌশল খাতের আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের শেয়ার মূল বাজারে হাতবদল হয় ‘ফ্লোর প্রাইস’ ২১৩ টাকা ৩০ পয়সায়। ১০ বারে হাতবদল হয় কেবল ৫০৫টি শেয়ার। অথচ সেদিন এ শেয়ার ১৯৬ থেকে ২৩১ টাকা ৯০ পয়সাতেও হাতবদল হয়েছে ‘ব্লক মার্কেটে’। তিন বারে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৫৬টি শেয়ার লেনদেন হয় সেখানে। এই বিনিয়োগকারীরা মূল বাজার থেকে আরও সস্তায় একই কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারতেন।