[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1161390576.png[/IMG]
পশ্চিমা গাড়ি নির্মাতাদের বিদায়ে রুশ ভোক্তার সামনে সুযোগ সীমিত হয়ে আসছে। তবে এ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে সুবিধাভোগী হিসেবে দেখা যাচ্ছে চীনা নির্মাতাদের। বাজারে শূন্যতাকে কাজে লাগিয়ে রাশিয়ায় শক্তিশালী অবস্থান করে নিচ্ছে চীনা গাড়ি ব্র্যান্ডগুলো। গাড়ি শিল্প বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান অটোস্ট্যাটের উপাত্তে দেখা গেছে, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ায় নতুন গাড়ি বিক্রির প্রায় ৪০ শতাংশ হাভাল, চেরি ও গিলির। ২০২২ সালের একই সময়ে যেখানে এ হিস্যা ছিল ১০ শতাংশেরও কম। রেনোঁ, নিশান ও মার্সিডিজের মতো পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলোর কার্যক্রম বন্ধ বা গুটিয়ে নেয়া চীনা নির্মাতাদের জন্য শাপেবর হিসেবে দেখা দিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে আসছেন রুশ গাড়ি ক্রেতা ও ডিলাররা। অনেকেই মনে করছেন, চীনা গাড়ির মান পশ্চিমা প্রতিদ্বন্দ্বীদে তুলনায় অনেক পিছিয়ে। বাজার হিস্যা বাড়ানোর সঙ্গে গাড়ির মান বৃদ্ধিতে মনোযোগ দেয়া উচিত বলে মনে করেন শিল্প বিশেষজ্ঞরা।
চীনা নির্মাতাদের নিয়ে ভোক্তা অভিযোগের বিষয়টি উড়িয়ে দেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। গত ডিসেম্বরে চীন সফর করা এ নেতা মনে করেন, চীনা পণ্য নিয়ে অনেক ভোক্তার মনোভাব সেকেলে। আমরাও একসময় চীনা পণ্যের ডিজাইন নিয়ে ঠাট্টা-মসকরা করতাম। কিন্তু কয়েক দিন আগে আমি নিজে গাড়ি চালিয়ে দেখেছি। বেশ আস্থার সঙ্গেই বলা যায়, মার্সিডিজের চেয়ে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই চীনা গাড়ি কোম্পানিগুলো।
গত বসন্তে বেশির ভাগ পশ্চিমা গাড়ি কোম্পানি রাশিয়ায় কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। চলতি শতকের শুরুর দিকে রাশিয়ায় কারখানা নির্মাণ শুরু করেছিল পশ্চিমা কোম্পানিগুলো। শুরুতে স্থানীয় কোম্পানিগুলোর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও একপর্যায়ে বেশ ভালো অবস্থান ছিল তাদের। পশ্চিমাদের ভিড়ে তেমন জায়গা করে নিতে পারেনি চীনা কোম্পানিগুলো। ভ্লাদিভস্টকের অল্টএয়ার-অটোর পরিচালক ভ্লাদিমির শেসটাক বলেন, আমাদের জীবনের বেশির ভাগ সময় গেছে ইউরোপীয়, জাপানি ও মার্কিন ব্র্যান্ড নিয়ে। চীনা কোম্পানিগুলো শুরুতে তেমন পাত্তা পায়নি। কিন্তু তারা যে গতিতে এগোচ্ছে তাতে গুরুত্ব দেয়া ছাড়া উপায় নেই। এদিকে গাড়ি শিল্প বিশেষজ্ঞ সের্গেই আসলানিয়ান বলেন, চীনা গাড়ি যদিও শূন্যস্থান পূরণ করছে তবে তাদের সুনামের অভাব এতে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অটোস্ট্যাট ও পিপিকের উপাত্তে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে চীনা ব্র্যান্ডগুলোর বাজার হিস্যা ছিল ৩৭ দশমিক ১৫ শতাংশ। ২০২২ সালের একই সময়ে যেখানে হিস্যা ছিল ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ইউরোপীয়, জাপানি ও কোরীয় কোম্পানিগুলোর হিস্যা ৭০ থেকে ২২ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে।
মস্কো ও বেইজিংয়ের সহযোগিতা বৃদ্ধির স্মারক হিসেবে রাশিয়ায় গাড়ি নির্মাণ করছে চীনা কোম্পানি হাভাল। এছাড়া চীনের জিএসি থেকে ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ, নকশা ও প্রকৌশল সুবিধা নিচ্ছে সোভিয়েত যুগের ব্র্যান্ড মস্কভিচ।
মান নিয়ে আস্থা সংকটের পাশাপাশি দামও রুশ গ্রাহকদের চিন্তার বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে। এমনকি পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র মেদভেদেভের কাছেও মস্কভিচের দাম অনেক বেশি বলে মনে হয়েছে। মস্কভিচ ব্র্যান্ডের দ্য মডেল থ্রির দাম পড়ছে ২০ লাখ রুবল বা ২৬ হাজার ১৯৫ ডলার। যেখানে রাশিয়ায় সর্বোচ্চ বিক্রীত গাড়ি লাডা গ্রান্টার দাম পড়ছে ৬ লাখ ৮০ হাজার রুবল।