মহামারীর কারণে কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় ব্যাহত হয়েছিল সৌদি আরবের পর্যটন খাত। ২০২০ সালে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর চলতি বছর বিপুল হজযাত্রী সমবেত হয় মক্কায়। সারা বিশ্ব থেকে সেখানে গেছে প্রায় ১৬ লাখ মুসলিম। ফলে সৌদি আরব ও উপসাগরীয় অঞ্চলের ট্রাভেল এজেন্সি, এয়ারলাইনস ও পর্যটন খাতে সম্প্রসারিত হয়েছে বাণিজ্যিক সুবিধা। মহামারী চলাকালীন পর্যায়ের তুলনায় চলতি বছর হজযাত্রীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। ২০২০ সালে মাত্র ১০ হাজার এবং ২০২১ সালে প্রায় ৫৯ হাজার জনকে সামাজিক দূরত্ব মেনে হজ পালনের অনুমতি দেয়া হয়। গত বছর হজযাত্রীর সক্ষমতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হলেও তা মাত্র ১০ লাখে সীমাবদ্ধ রাখা হয়। সে সময়ে কর্তৃপক্ষ বয়স্ক ব্যক্তিদের সুরক্ষার জন্য ৬৫ বছরের বয়সসীমা বেঁধে দেয়। পাশাপাশি ঈদুল আজহার ঠিক আগে আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উড়োজাহাজ সংস্থা এমিরেটসও অতিরিক্ত ফ্লাইট সংযোজন করে। ৭ জুলাই পর্যন্ত বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজে ১০টি করে ফ্লাইট পরিচালনা করবে প্রতিষ্ঠানটি। এমিরেটস জানিয়েছে, পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, সেনেগাল, আইভরি কোস্ট, মরিশাস ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে হজ ভ্রমণের জন্য বুকিং বেড়েছে। ঈদুল আজহার ছয়দিনের ছুটিতে এয়ারলাইনসটি জনপ্রিয় অবকাশ গন্তব্যগুলোয় ৩৪টি ফ্লাইট যুক্ত করেছে।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1179785030.jpg[/IMG]
এদিকে মক্কার হোটেলগুলো শতভাগ বরাদ্দ হয়ে গেছে। সর্বশেষ রমজানে হোটেলগুলো ৮০ শতাংশ এবং গত বছর হজের সময় ৬০ শতাংশ বরাদ্দ হয়েছিল। দর্শনার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে নির্মাণ ও আবাসন শিল্পের জন্য নতুন ব্যবসার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বার্ষিক হজযাত্রা ছোট ছোট ব্যবসার জন্যও আয়ের উৎস। ছোট ছোট ব্যবসার মধ্যে রয়েছে থাকার ব্যবস্থা, পরিবহন ও উপহারসামগ্রী বিক্রি। ধর্মীয় পর্যটন সৌদি আরবের পর্যটনের মূল চালিকাশক্তি। ভবিষ্যতেও এটি ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে বলে জানিয়েছেন আতিথেয়তা, পর্যটন ও অবসর পরামর্শবিষয়ক সংস্থা নাইট ফ্রাংকের প্রধান তুরাব সালিম।

মদিনায় বর্তমানে ১৮ হাজার হোটেল রুম রয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে হোটেল রুমের সংখ্যা ১ লাখ ২৫ হাজারে উন্নীত করার লক্ষ্য ঠিক করেছে দেশটি। মক্কাও হোটেল সক্ষমতা বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে। ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বেশি হোটেল রুম থাকবে মক্কা শহরে। ধর্মীয় পর্যটনকে অবসর পর্যটনে রূপান্তর করতেও কাজ করছে সৌদি আরব। এ খাতে বড় ভূমিকা রাখবে এয়ারলাইনসগুলো। নতুন এয়ারলাইনস রিয়াদ এয়ার বিশ্বব্যাপী ২১২টিরও বেশি গন্তব্যে ভ্রমণ সেবা দেবে। সৌদি সরকারের লক্ষ্য, ২০৩০ সাল নাগাদ তিন কোটি মানুষের জন্য হজ ও ওমরাহ পালনের সুযোগ তৈরি করা।