[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1872810720.jpg[/IMG]
মাসিক বিক্রির নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে ভারতের গাড়ি শিল্প। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭৩৩টি যাত্রীবাহী গাড়ি (পিভি) বিক্রি হয়েছে দেশটিতে। এর পেছনে প্রধান চালিকাশক্তি ছিল বিজয়া দশমী ও দীপাবলির আগে পাইকারি বিক্রেতাদের মজুদ বৃদ্ধির প্রবণতা, গাড়ির উৎপাদন এবং চিপের সরবরাহ বৃদ্ধি। অভ্যন্তরীণ পাইকারি বাজারে যাত্রীবাহী গাড়ি বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকলের (এসইউভি) চাহিদা ছিল উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেশি। এর আগে আগস্টে অভ্যন্তরীণ বাজারে যাত্রীবাহী গাড়ি বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৮৯৭টি।
গনেশ চতুর্থী ও জন্মাষ্টমীর প্রভাব পড়েছে পশ্চিম ভারতের গাড়ির বাজারে। অন্যদিকে, কেরালায় ১৭ সেপ্টেম্বর শেষ হয়ে গেল চিংগাম মাস। কেরালার ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ‘*চিংগাম’ বছরের প্রথম মাস। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মিলে চিংগাম। এ সময়ের ওনাম উৎসব চার-দশদিন পর্যন্ত চলে। সেপ্টেম্বরের গাড়ি বিক্রির সূচকে তিনটি উৎসবই ভূমিকা পালন করেছে। পাশাপাশি উত্তর, পূর্ব ও মধ্য ভারতীয় অঞ্চলগুলোয় পাইকারি ব্যবসায়ীরা গাড়ি মজুদ করে রাখছেন সামনের দীপাবলি ও বিজয়া দশমীকে বিবেচনা করে।
ভারতের অধিকাংশ শিল্পোৎপাদন কারখানাই সেমিকন্ডাক্টর ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে। ফলে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়েছে এসইউভির উৎপাদন। মারুতি সুজুকিসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের কাছেই চিপ একটা প্রতিবন্ধকতা হিসেবে ছিল। জুলাইয়ে সংকটের মধ্য দিয়ে গেছে সেমিকন্ডাক্টর খাত। বর্তমানে চিপ সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়াও বিক্রি বৃদ্ধির পেছনে অন্যতম নিয়ামক।
মারুতি সুজুকি ইন্ডিয়ার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শশাঙ্ক শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধে যাত্রীবাহী গাড়ির পাইকারি বিক্রি ২০ লাখ ৭২ হাজার ইউনিটে দাঁড়িয়েছে। গত বছর একই সময়ে বিক্রির পরিমাণ ছিল ১৯ লাখ ৩৭ হাজার। অন্যদিকে, চলতি বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বরের মধ্যে গাড়ি বিক্রি হয়েছে ৩০ লাখ ৯১ হাজার। শ্রীবাস্তব বলেছেন, ‘*প্রথমবারের মতো জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর ব্যবধানে গাড়ি বিক্রির সংখ্যা ৩০ লাখ স্পর্শ করল। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে আমরা ৪০ লাখ গাড়ি বিক্রি করতে পারব।’
মারুতির গাড়ি বিক্রি সেপ্টেম্বরে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার ৮১২টিতে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, হুন্দাইয়ের বিক্রি বেড়েছে ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৩২ শতাংশ বিক্রি কমেছে টাটা মোটরসের। মারুতি ও হুন্দাইয়ের টাটাই ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম যাত্রীবাহী গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। ভারতীয় বাজারে সেপ্টেম্বরে উল্লেখযোগ্য চমক দেখিয়েছে মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা। প্রতিষ্ঠানটির গাড়ি বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ বেড়েছে। টানা তৃতীয় মাসের মতো বেড়েছে এসইউভি বিক্রি।
এদিকে সেপ্টেম্বরে গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স (জিএসটি) দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৬২ ট্রিলিয়ন রুপিতে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে জিএসটি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে গড় জিএসটি আদায় উন্নীত হয়েছে ১ দশমিক ৬৫ ট্রিলিয়ন রুপিতে। জিএসটি সংগ্রহ ও ভারতের ক্রম সম্প্রসারমাণ গাড়ির বাজার দেশটির সার্বিক অর্থনীতির জন্য আশাপ্রদ হিসেবে বিবেচনা করছেন বিশ্লেষকরা।