যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। অন্যদিকে ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন শ্রমবাজারে পূর্বাভাসের বেশি কর্মী যোগ দিয়েছে। উচ্চ সুদহারজনিত আশঙ্কার মাঝে গত মাসে নতুন ২ লাখ ৭৫ হাজার কর্মী শ্রমবাজারে যোগ দিয়েছেন। দেশটির শ্রম বিভাগ এ বিষয়ক প্রতিবেদনে জানায়, ফেব্রুয়ারিতে পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি কর্মী শ্রমবাজারে যোগ দিলেও বেকারত্বের হার বেড়ে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ হয়েছে। জানুয়ারিতে এ হার ছিল ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। একই সঙ্গে টানা ২৫ মাস ধরে বেকারত্বের হার এখন ৪ শতাংশের নিচে, যা ১৯৬০ সালের পর থেকে সবচেয়ে দীর্ঘতম ধারা। ফেব্রুয়ারিতে স্বাস্থ্যসেবা, সরকারি সংস্থা এবং খাদ্য ও পানীয় পরিষেবা খাতে কর্মসংস্থান প্রসারিত হয়েছে। [IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/255586385.jpg[/IMG]
বেকারত্ব বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বিশ্লেষকরা বলছেন, খুব বেশি উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু নেই। উচ্চ সুদহারের কারণে দেশের অর্থনীতি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে, এমন আশঙ্কার কারণ নেই বলেও জানান তারা। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জশ ফারম্যান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান মন্দা ও মূল্যস্ফীতির উদ্বেগ কিছুটা সরিয়ে দিয়েছে। অর্থনৈতিক অবস্থা ভারসাম্যের দিকে রয়েছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোয় মার্কিন শ্রমবাজারে পূর্বাভাসের চেয়ে কম কর্মসংস্থান দেখা গেছে। এর মধ্যে গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মিলে পূর্বাভাসের চেয়ে ১ লাখ ৬৭ হাজার কম কর্মসংস্থান হয়েছে বলে জানায় মার্কিন শ্রম বিভাগ। ফেব্রুয়ারির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ওই মাসে দেশটিতে আনুমানিক ৩ লাখ ৩৪ হাজার মানুষ শ্রমবাজারের বাইরে ছিল। এ সপ্তাহের শুরুতে প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুসারে, জানুয়ারিতে চাকরি ছেড়ে দেয়া কর্মী সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৩ লাখ ৮৫ হাজার। ২০২১ সালের পর এটি সর্বনিম্ন সংখ্যা।
একই সময়ে বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান শক্তিশালী ধারায় ফিরে এসেছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। কর্মসংস্থানবিষয়ক সংস্থা এডিপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান বেড়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার।
যুক্তরাষ্ট্রে ছাঁটাই তীব্রভাবে বেড়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কর্মসংস্থানবিষয়ক সংস্থা চ্যালেঞ্জার গ্রে অ্যান্ড ক্রিসমাস। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, গত মাসে দেশটিতে ছাঁটাই হয়েছে প্রায় ৮৪ হাজার ৬৫৮ কর্মী, যা ২০০৯ সালের পর থেকে যেকোনো সময়ের জন্য সর্বোচ্চ। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বেকারত্বের হার বাড়লেও যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান বাড়ার বিষয়টি আশাব্যঞ্জক। শ্রমবাজারের গতিশীলতা বৃদ্ধিতে দেশটির সংস্থাগুলো বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় গড় ঘণ্টায় বেতন আগের বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। মাসিক হিসেবে বৃদ্ধির হার দশমিক ১ শতাংশ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার কমানোর বিষয়ে বিতর্কের সময় কর্মসংস্থান ও বেকারত্ব বাড়ার প্রতিবেদনটি প্রকাশ হলো।