জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভরতা কমাতে নিজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে ইউরোপের দেশগুলো। এর পরই একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে জার্মানি। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি উপকূলীয় একটি টার্মিনাল সম্প্রসারণে তহবিল দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। সমুদ্র উপকূলে বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্প্রসারণের লক্ষ্য অর্জনে এ সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা জার্মান অফশোর উইন্ড এনার্জি ফাউন্ডেশন। এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলা হয়, উত্তর সাগর উপকূলে কাক্সহেভেন বন্দরে টার্মিনাল সম্প্রসারণে অর্থ সহযোগিতা দিচ্ছে সরকার। রকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ উপকূলীয় টার্মিনাল নির্মাণে সরকার প্রায় ৩০ কোটি ইউরো বা ৩২ কোটি ৪১ লাখ ডলার ব্যয় করবে। এর আওতায় টার্মিনাল সম্প্রসারণে ৩০ হেক্টর জমি এবং বেসরকারি বন্দর খাতে অর্থায়ন করা হবে।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/809939366.jpg[/IMG]
সরকারের পক্ষ থেকে আরো বলা হচ্ছে, কাক্সহেভেন বন্দরে এ কার্যক্রম নবায়নযোগ্য শক্তি খাতের সম্প্রসারণে একটি কেন্দ্রীয় প্রকল্প। বিদ্যুতের উৎস স্থানান্তরের এ প্রক্রিয়ায় সরকারকে অংশ নিতে এ খাতের উৎপাদকরা সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে আসছে। জার্মানির পরিবহনমন্ত্রী ভলকার উইসিং সম্প্রতি বলেছেন, ‘ফেডারেল সরকার আর্থিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত টার্মিনালকে সাহায্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জার্মান অফশোর উইন্ড এনার্জি ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, নতুন অফশোর উইন্ড ফার্ম নির্মাণে চলতি দশকের শেষ নাগাদ ২০০ হেক্টর পর্যন্ত অতিরিক্ত এলাকা প্রয়োজন, যা ২৭০টি ফুটবল মাঠের সমান।
এদিকে গত বছর আন্তর্জাতিক বিদ্যুৎ বাণিজ্যে ২৪৯ কোটি ডলারের ঘাটতিতে ছিল জার্মানি। ঘাটতি দেখা দিলেও আমদানির কারণে কিছু দিক দিয়ে লাভবানও হয়েছে জার্মানি। দেশটি ২০৩৫ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাবে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত বছরের মার্চে ছয় দশকের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কর্মসূচির সমাপ্তি টানে। এ কারণে পারমাণবিক সক্ষমতাকে প্রশ্রয় দেয়নি জার্মানি। এর বদলে অন্য বিকল্পগুলোকে কাজে লাগিয়েছে।
বিদ্যুৎ আমদানি বৃদ্ধির আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ ও গ্রিনহাউজ নিঃসরণ কমানোর পরিকল্পনা। এর মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে জলবায়ু লক্ষ্য অর্জনে অনেকটাই এগিয়ে যাবে জার্মানি। এ লক্ষ্য অর্জনে দেশটির প্রতিপাদ্য ১৯৯০ সালের তুলনায় ২০৩০ সালে কার্বন নিঃসরণ ৬৫ শতাংশ কমিয়ে আনা। চূড়ান্ত লক্ষ্য হিসেবে ২০৪৫ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার দিকে এগোচ্ছে জার্মানি।