ফাইভজি প্রযুক্তি ও ক্লাউড গেমিং প্রসারের ফলে বৈশ্বিক গেমিং সফটওয়্যারের বাজার দ্রুত বাড়ছে। ২০৩২ সালের মধ্যে এ বাজারের মূল্য ৩০ হাজার ১৫০ কোটি ডলারে পৌঁছবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। বাজার গবেষণা সংস্থা অ্যালাইড মার্কেট রিসার্চের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-৩২ সাল পর্যন্ত গেমিং সফটওয়্যারের বাজারের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার হবে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ। পূর্বাভাসকালে উত্তর আমেরিকা এ বাজারে শীর্ষস্থান ধরে রাখবে ও গেমিং সফটওয়্যার বৃদ্ধিতে নেতৃত্ব দেবে।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/135853139.jpg[/IMG]
গেমিং সফটওয়্যার বলতে ভিডিও গেম তৈরি, খেলা ও পরিচালনায় ব্যবহৃত কম্পিউটার প্রোগ্রামকে বোঝায়। এতে গেম ইঞ্জিন, গ্রাফিক্স রেন্ডারিং, সাউন্ড প্রসেসিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো বিভিন্ন উপাদান রয়েছে। অ্যালাইড মার্কেট রিসার্চ বলছে, বৈশ্বিক গেমিং সফটওয়্যার শিল্প বেশকয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে একটি প্রধান কারণ হলো ফাইভজি প্রযুক্তির প্রবর্তন, যা বিশেষভাবে মোবাইল গেমিংকে প্রভাবিত করছে। এ প্রযুক্তি ক্লাউড গেমিংকে মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ করে তুলছে ও গেমের গ্রাফিক্স কনসোলের মতো উন্নত করছে। আবার আগের তুলনায় গেমারের সংখ্যাও বেড়েছে। এছাড়া মোবাইল ডিভাইসে প্রতিযোগিতামূলক ও ইমার্সিভ গেমিংয়ের (গেমের দুনিয়ায় পুরোপুরি নিমজ্জিত করা) জনপ্রিয়তা এ বাজারের সম্প্রসারণে অবদান রাখছে। ক্লাউড গেমিংয়ের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি ও ক্রস-প্লাটফর্ম গেমিংয়ের (একাধিক প্লাটফর্মে খেলার সুবিধা) গেমিংয়ের উন্নতিও নতুন সুযোগ তৈরি করছে।
প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পরও গেমিং সফটওয়্যার শিল্প কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এর মধ্যে আছে উচ্চ নির্মাণ খরচ ও সফটওয়্যার নির্মাণে দীর্ঘ সময়। এছাড়া ভবিষ্যতে গেম তৈরি করতে উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োজন বাড়বে, ফলে তুলনামূলক ছোট গেম ডেভেলপারদের বাজারে প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য বড় বাজেট ও সুবিধা দরকার, যা ছোট পরিসরের ডেভেলপারদের নাও থাকতে পারে। এদিকে পাইরেসি বাজারের প্রবৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। গেম বা সফটওয়্যার অবৈধভাবে কপি ও ডাউনলোড করার কারণে গেম ডেভেলপারদের প্রত্যাশিত আয় কমে যায়। তবে নতুন কিছু প্রযুক্তির কারণে এ বাজারের সম্ভাবনার কথা জানান অ্যালাইড মার্কেট রিসার্চের বিশ্লেষকরা। যেমন অগমেন্টেড রিয়ালিটি (এআর), ভার্চুয়াল রিয়ালিটি (ভিআর) আরো বাস্তবসম্মত ও ইন্টারঅ্যাকটিভ গেমিং অভিজ্ঞতা তৈরি করছে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতি গেমিং সফটওয়্যার বাজারসহ সার্বিকভাবে গেমিং শিল্পের বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণে সহায়তা করছে।

কভিড-১৯ মহামারী বৈশ্বিক গেমিং সফটওয়্যার বাজার বৃদ্ধির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। মানুষ বেশির ভাগ সময় বাড়িতে অবস্থান করার কারণে গেমিং এন্টারটেইনমেন্টে জন্য চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায় ও অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার গেমস জনপ্রিয়তা লাভ করে। ২০২২ সালে গেমিং সফটওয়্যারের বাজারে ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ হিস্যা নিয়ে শীর্ষে ছিল স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট গেমস। এ সময় বক্স/সিডি গেমসের হিস্যা ছিল ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ। এ সাব-সেগমেন্ট ২০৩২ সালের মধ্যে ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশ হিস্যা নিয়ে এ বাজারে আধিপত্য বজায় রাখবে বলে প্রত্যাশা করছে অ্যালাইড মার্কেট রিসার্চ। বক্স বা সিডি গেমসের জনপ্রিয়তা বাড়ার অন্যতম কারণ এসব গেম খেলতে ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন হয় না।