জার্মানির কার্যক্রমে বড় পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়েছে অন্যতম শীর্ষ গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভক্সওয়াগন। সম্প্রতি এর অংশ হিসেবে কয়েক বছরের মধ্যে প্রায় ৩৫ হাজার কর্মী ছাঁটাই ও উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি। এর আগে কোম্পানি ও শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে ৭০ ঘণ্টা দীর্ঘ আলোচনা হয়। কোম্পানির ৮৭ বছরের ইতিহাসে এটিই কোম্পানি ও ইউনিয়নের দীর্ঘতম আলোচনা।
চুক্তিতে বলা হয়, কয়েক বছরের মধ্যে ধীরে ধীরে ৩৫ হাজার কর্মী চাকরি হারাবে। তবে বাধ্যতামূলকভাবে কাউকে চাকরি ছাড়তে হবে না। এছাড়া ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনার পর বেতন কমানোর পরিকল্পনা থেকে কিছুটা সরে এসেছে কোম্পানি।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/2099118560.jpg[/IMG]
এদিকে বিনিয়োগকারীরা এ চুক্তিকে একটি স্বস্তি হিসেবে দেখছেন। চুক্তির পর কোম্পানির শেয়ারদর ২ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। যদিও চলতি বছর ভক্সওয়াগনের শেয়ারের দাম ২৩ শতাংশ কমেছে।

ভক্সওয়াগন সেপ্টেম্বর থেকে ইউনিয়ন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে আসছে। এর মধ্যে প্রায় এক লাখ কর্মী গত এক মাসে দুটি বড় ধর্মঘট করেছে, যা ভক্সওয়াগনের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ। এর পরই ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নেয় ভক্সওয়াগন।

ভক্সওয়াগন গ্রুপের সিইও অলিভার ব্লুম বলেন, ‘*এ চুক্তির মাধ্যমে কোম্পানি খরচ, সক্ষমতা ও কাঠামোর দিক থেকে তার ভবিষ্যতের জন্য একটি দৃঢ় পথ নির্ধারণ করেছে। আমরা এখন আমাদের ভাগ্য সফলভাবে গড়তে পারার অবস্থানে ফিরে এসেছি।’

চুক্তি অনুযায়ী, ভক্সওয়াগন বার্ষিক ১ হাজার ৫০০ কোটি ইউরো সাশ্রয় করবে। ফলে চলতি বছরের আর্থিক পরিকল্পনায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না।

চুক্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, কোম্পানির ড্রেসডেন প্লান্ট ২০২৫ সালের মধ্যে বন্ধ হবে এবং ওসনাব্রুক সাইটের জন্য নতুন মালিক খোঁজা হবে। পাশাপাশি কিছু স্থাপনা মেক্সিকোতে সরিয়ে নেয়া হবে।

কর্মী ছাঁটাইয়ের ব্যাপারে চুক্তিতে বলা হয়, এটি পরবর্তী কয়েক বছরের মধ্যে ধীরে ধীরে করা হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে কর্মচারী সংখ্যা ২৫ শতাংশ কমানো হবে। চুক্তি অনুযায়ী, ভক্সওয়াগনের কর্মীদের পরবর্তী চার বছর কোনো বেতন বাড়বে না। কিছু বোনাস বাদ দেয়া বা কমানো হবে। এছাড়া কোম্পানির বৃহত্তম ভলফসবুর্গ প্লান্টের উৎপাদন চারটি অ্যাসেম্বলি লাইন থেকে কমিয়ে দুটি করা হবে।

ইউনিয়ন নেতারা বলেছেন, এটি শ্রমিকদের জন্য সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধান। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইউরোপের বাজারে স্থবিরতা কাটাতে চুক্তি ছাড়া আরো পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।