কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ক্লাউড কম্পিউটিং ও টেকসই প্রযুক্তিভিত্তিক অগ্রগতির কারণে বৈশ্বিক তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যয় ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। শেষ হওয়া বছরে এ খাতে ব্যয় ৪ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়তে পারে। আর ২০২৫ সালে তা ৫ শতাংশে পৌঁছতে পারে। সম্প্রতি তথ্যপ্রযুক্তিভিত তিক শীর্ষস্থানীয় বৈশ্বিক গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইডিসির এক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাত ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সাপ্লাই চেইনের বাধাসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় খাপ খাইয়ে নিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলো দক্ষতা, উদ্ভাবন ও প্রতিযোগিতা বাড়াতে উদীয়মান প্রযুক্তির ওপর নির্ভরতা বাড়াচ্ছে, যা বৈশ্বিক প্রযুক্তি বাজারের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1750049454.jpg[/IMG]
বিশ্বের বৃহত্তম প্রযুক্তি বাজার যুক্তরাষ্ট্র এ প্রবৃদ্ধির কেন্দ্রে রয়েছে। দেশটির প্রতিষ্ঠানগুলো এআই ও অ্যালগরিদম নিয়ন্ত্রণে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। ক্লাউড কম্পিউটিং ও উন্নত অটোমেশনও যুক্তরাষ্ট্রে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে। অ্যামাজন, গুগল ও মাইক্রোসফটের মতো শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো দেশটির আধিপত্য বাড়াতে সাহায্য করছে।

বিপুলসংখ্যক ব্যবহারকারী নিয়ে ভারত বৈশ্বিক প্রযুক্তি ইকোসিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চলতি বছরের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের সময়ও স্থিতিশীলতা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে দেশটি। ২০২৪ অর্থবছরে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি খাত ৯৩০ কোটি ডলার অতিরিক্ত আয় করেছে। একই সময় দেশটির প্রযুক্তি খাতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ৭৬ শতাংশ বেড়েছে। দেশটির তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোগগুলো ১০ কোটি ডলারের বেশি অর্থায়ন সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে।

ন্যাসকমের প্রেসিডেন্ট রাজেশ নাম্বিয়ার বলেন, ‘মহামারীজনিত অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেও শিল্পটি অসাধারণ স্থিতিশীলতা প্রদর্শন করেছে।’ তিনি জানান, এআই ও জেনারেটিভ এআইয়ের উদ্ভাবন ত্বরান্বিত হওয়া, প্রকৌশলে গবেষণা ও উন্নয়নে প্রবৃদ্ধি এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি স্টার্টআপ সম্প্রসারণ এ শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও প্রযুক্তি সার্বভৌমত্ব অর্জনের প্রয়াস বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনে পরিবর্তন আনছে। দেশ ও প্রতিষ্ঠানগুলো একক ভৌগোলিক স্থানের ওপর নির্ভরতা কমাচ্ছে, যা উদীয়মান বাজারগুলোর জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করছে।

২০২৫ সালকে সামনে রেখে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এআই ও জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের পরিচালনা কৌশলে পরিবর্তন আনছে। পাশাপাশি পরিবেশগত প্রভাব কমাতে দক্ষতার সঙ্গে জ্বালানি ব্যবহারে বিনিয়োগ করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

আইডিসির পূর্বাভাসে বলা হয়, ২০২৫ সাল বৈশ্বিক প্রযুক্তি শিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর হবে। ৫ শতাংশ প্রযুক্তি ব্যয় বাড়ার প্রত্যাশার সঙ্গে খাতটি নতুন সুযোগ উন্মোচন, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে রূপান্তরমূলক শক্তি হিসেবে তার অবস্থান আরো শক্তিশালী করার জন্য প্রস্তুত। এদিকে বিশ্বব্যাপী চিপ ও সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের আকার ২০৩০ সালের মধ্যে ১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছার পূর্বাভাস দিয়েছে গবেষণা সংস্থা পিডব্লিউসি।