ট্রেডিং কৌশল বলতে বোঝায় এমন একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা বা নিয়মের সংকলন, যা অনুসরণ করে একজন ট্রেডার বাজারে কখন প্রবেশ (Entry) করবে, কখন বেরিয়ে আসবে (Exit), এবং কীভাবে সে তার ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ (Risk Management) করবে। এটি মূলত ট্রেডিংয়ের একটি কাঠামোগত পদ্ধতি, যা ট্রেডারের আবেগ বা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর না করে সুনির্দিষ্ট নিয়মে পরিচালিত হয়। একটি কার্যকর কৌশল ট্রেডারের মনস্তাত্ত্বিক চাপ কমায় এবং ধারাবাহিক লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। সাধারণত একটি ট্রেডিং কৌশলে কয়েকটি মূল উপাদান থাকে, যেমন: মার্কেট বিশ্লেষণ (টেকনিক্যাল, ফান্ডামেন্টাল বা সেন্টিমেন্ট), নির্ধারিত Entry এবং Exit নিয়ম, Position Sizing বা কত লটে ট্রেড করা হবে, এবং প্রতি ট্রেডে Risk-Reward Ratio কত হবে। উদাহরণস্বরূপ, কেউ যদি Moving Average ও RSI ব্যবহার করে দেখে মার্কেট ওভারসোল্ড কিনা এবং সাপোর্ট লেভেল থেকে বাই এন্ট্রি নেয়, তা হলে সেটি একটি নির্দিষ্ট ট্রেডিং কৌশল হিসেবেই ধরা হয়। ট্রেডিং কৌশল বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে—যেমন Scalping (খুব অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত লাভ নেওয়া), Day Trading (একদিনের মধ্যে ট্রেড সম্পন্ন করা), Swing Trading (কয়েকদিন বা সপ্তাহব্যাপী ট্রেড ধরা রাখা), কিংবা Position Trading (দীর্ঘমেয়াদে ট্রেন্ড অনুসরণ করা)। প্রতিটি কৌশল ভিন্ন ট্রেডারের জন্য ভিন্নভাবে উপযুক্ত হতে পারে। তাই নিজের মানসিকতা, সময় ও ঝুঁকির সহনশীলতা অনুযায়ী উপযুক্ত কৌশল বেছে নেওয়া জরুরি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যেকোনো কৌশল বাস্তব ট্রেডে প্রয়োগের আগে অবশ্যই সেটি Backtest করতে হবে—অর্থাৎ পূর্বের মার্কেট ডেটার উপর পরীক্ষা করে দেখতে হবে এটি কার্যকর কিনা। এমনকি সফল একটি কৌশলও ফলপ্রসূ হবে না যদি ট্রেডার সেটিতে শৃঙ্খলা বজায় না রাখে। তাই একটি ভালো ট্রেডিং কৌশল তৈরি, সেটি অনুসরণে দৃঢ়তা রাখা, এবং সময়ের সঙ্গে সেটিকে উন্নত করা—এই তিনটি বিষয়ের সমন্বয়েই ট্রেডিংয়ে সাফল্য অর্জন সম্ভব।